প্রকাশিত: ১৯/০৩/২০১৮ ৫:২৪ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:১৫ এএম

ইফসান খাঁন ইমন, নাইক্ষ্যংছড়ি :
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অর্থনৈতিক সম্মৃদ্ধ, জনবহুল ও রাবার শিল্পের জন্য বিখ্যাত বাইশারী, কচ্ছপিয়া, গর্জনীয়া ও ঈদগড় সহ আশপাশ এলাকায় ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলে যাত্রী সেবা দিয়ে জীবন চলে পাঁচ শতাধিক বেকার যুবকের। বিগত আট বছর পূর্বে ইউনিয়নের দক্ষিন বাইশারী এলাকার মোঃ ছিদ্দিক প্রথম মোটর সাইকেলে যাত্রী সেবা শুরু করেন। তার দেখাদেখি বর্তমানে প্রায় ৫ ইউনিয়ন মিলে হাজারের উপর বেকার যুবক প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মটর সাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে সংসার চালায় এবং অনেকেই সাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন।
দিন দিন এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা বিভিন্ন এন,জি,ও সংস্থা থেকে ঋন নিয়ে মটর সাইকেল ক্রয় করে জীবন নির্বাহ করছেন। ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেলের কারণে দুর্গম পাহাড়ী জনপদের উপজাতী ও বাঙ্গালীদের জন্য সহজেই যার যার কর্মস্থলে পৌছা সম্ভব হচ্ছে বলে অনেকেই জানান। যার কারনে ব্যাপক হারে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই বাহনটি।
মোটর সাইকেল চালক আনোয়ার হোসেন জানান, পরিশ্রম করে জীবন চালানোর তাগিদে প্রায় লক্ষাধিক টাকা দিয়ে একটি মোটর সাইকেল ক্রয় করি। সেই মোটর সাইকেলে করে সরকারী চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষদের গন্তব্য স্থানে পৌছে দিয়ে আসি।
বিদেশ ফেরত ছৈয়দ হোছন ও তাসমিন আলম জানান, বিদেশ থেকে ফিরে আর কোন উপায় না দেখে আমিও একটি মোটর সাইকেল ক্রয় করি এবং ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালিয়ে জীবন নির্বাহ করি।
চালক নুরুল আলম জানায়, তার ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল দিয়ে বাইশারী-ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়ক, বাইশারী-গর্জনীয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়ক এবং ইউনিয়নের অভ্যন্তরিন সড়ক গুলোতে যাত্রী সেবা প্রদান করেন।
মোটর সাইকেল সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুল মান্নান জানান, দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় হাজারো রাবার বাগান রয়েছে। এসব রাবার বাগানে যাতায়তের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে মোটর সাইকেল। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকেও দূর্গম এলাকায় টহল বা কোন অভিযান পরিচালনা করতে মোটর সাইকেল প্রয়োজন হয়।
দৌছড়ি এলাকার বাসিন্দা মোঃ ইদ্রিস ও সব্বির আহমদ জানান, ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেলের কারণে দ্রুত জরুরী কাজের জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌছা খুবই সহজ হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মটর সাইকেল চালকরা জানান, বর্তমানে দ্রুত পৌছানোর জন্য এলাকায় ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেলের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। তবে সারা দিন কষ্ট করে মটর সাইকেল চালিয়েও শান্তি নেই, এলাকার কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোকজনের জন্য। কিছু মটর সাইকেল চোর সেন্ডিকেটের সদস্যরা এলাকায় প্রতিনিয়ত তাদেরকে চোরাই মটর সাইকেল ক্রয় করতে বলে। কিন্তু তারা এ সব চোরাই গাড়ি ক্রয় না করাতে বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কান ভারি করে আসছে।
ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল চালিয়ে বেকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি অনেক গুলো পরিবার সাবলম্বি হয়েছে এবং দ্রুত জরুরী কাজে যাওয়াও সম্ভব হচ্ছে। তাই এলাকার সচেতন মহল ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল চালকদের সরকারী ভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আহবান জানান।

পাঠকের মতামত